জাপানে এখন পর্যন্ত ১০০ বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় এক লাখে পৌঁছেছে, যা দেশটির জন্য একটি নতুন রেকর্ড। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই শতবর্ষী মানুষদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই নারী। সম্প্রতি প্রকাশিত এই পরিসংখ্যান জাপানের সমাজে এক গভীর পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে অপরিকল্পিত জনসংখ্যা হ্রাসের পাশাপাশি বয়স্ক মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
সাম্প্রতিক আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্যে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাপানে মোট ৯৯ হাজার ৭৬৩ জন শতবর্ষী ব্যক্তি ছিলেন। গত বছর তার তুলনায় এই সংখ্যা ৪ হাজার ৬৪৪ জন বেশি। এই ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই নারী, যা দেশের নারী শ্রমিকের দৃঢ় অবস্থান নির্দেশ করে।
জাপানের সবচেয়ে প্রবীণ নাগরিক হলেন ১১৪ বছর বয়সী শিগেকো কাগাওয়া, যিনি কিয়োটো থেকে ঠিক নারা অঞ্চলে থাকেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যখন তার বয়স ৮০ বছর ছিল, তখনও তিনি একজন চিকিৎসক হিসেবে কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। কাগাওয়া বলেছিলেন, ‘রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেয়ার অভ্যাসই আমার পা দুটোকে মজবুত করেছে, আর সেটাই আমার বর্তমান প্রাণশক্তির মূল উৎস।’
১৯ বছর বয়সে এই দীর্ঘজীবী নারী এখনো ভালো দেখতে পান এবং দিন কাটে টিভি দেখা, খবরের কাগজ পড়া ও ক্যালিগ্রাফি করে। তিনি মানবজীবনের দীর্ঘতা ও সুস্থতার বিষয়ে বলেন, ‘সুস্থ থাকতে আমি দৈনন্দিন কাজের প্রতি সতর্ক থাকি।’
জাপানের জনসংখ্যা গত কয়েক বছরে ব্যাপক হারে কমছে, বিশেষ করে বয়সবৃদ্ধির কারণে স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এর পাশাপাশি, এই সরবরাহের কারণে দেশের কর্মক্ষম জনশক্তি দ্রুত কমে যাচ্ছে।
গত মাসে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, ২০২৪ সালে জাপানের মোট জনসংখ্যা রেকর্ড ৯ লাখেরও বেশি কমে যাবে। এই পরিস্থিতিকে ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ হিসেবে বিবেচনা করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। তিনি জনসংখ্যা হ্রাস আটকাতে নানা পরিবার-বান্ধব নীতির কথা বলেন, যেমন কার্যকর কর্মঘণ্টার নমনীয়তা ও বিনামূল্যে ডে-কেয়ার ব্যবস্থা। তবে এই উদ্যোগগুলো এখনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেনি, কারণ জনসংখ্যার এই ধারা ধরে থাকছে।