নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের মোমনিপুর বাজারে রয়েছে জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচা মরিচের হাট। এ হাটে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচের ট্রেড হয়। এখানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়, যা দুই দিন আগে ছিল ১৩০-১৫০ টাকায়। হঠাৎ করে দাম পতনের কারণে কৃষকরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, এই দাম থাকলে তাদের অনেক লোকসান হবে। ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে কাঁচা মরিচের প্রবেশের কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
গত শুক্রবার মহাদেবপুরের মোমিনপুর কাঁচা মরিচের বাজারের দৃশ্য এটি। প্রতিদিন এখানে কাঁচা মরিচের হাট বসে। বছরজুড়ে ৬ থেকে ৭ মাস এই হাট পরিচালিত হয়। এখান থেকে কাঁচা মরিচ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
মহাদেবপুরের কুঞ্জবন এলাকা থেকে আসা কৃষক সোলেমান আলী ও গুলবর রহমান বলেন, এই বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কাঁচা মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু হাটে দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষকরা বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন। তারা বলছেন, অনেক খরচের মধ্য দিয়ে মরিচ চাষ করেছেন, এখন বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি, কীটনাশক খরচ মিটিয়ে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। প্রথমে প্রতিজন কেজি মরিচ ১৩০-১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়ার ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, এই হাটের মরিচ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়—ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রামসহ। তবে ভারত থেকে মরিচ আমদানি হওয়ার কারণে হঠাৎ এই দাম পতন শুরু হয়েছে।
মোমনিপুর হাটের কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, এই হাট জেলার সবচেয়ে বড়। বছরের ৬ থেকে ৭ মাস এখানে ব্যবসা চলে। প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মরিচের লেনদেন হয়। তবে এ দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ভালো আবহাওয়ার কারণে এ বছর মরিচের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। শুরুতে বাজারে সুন্দর দাম থাকলেও এখন দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা কিছু লাভবান হবেন বলে আশা করা যায়। তিনি আরও জানান, চলতি বছর নওগাঁয় ৭৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে, যা এই অঞ্চলের বৃহৎ আকারের চাষাবাদের অংশ। কৃষকদের প্রতি আমরা নিয়মিত পরামর্শ ও সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।