বুধবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর মাছ রপ্তানি নতুন দিগন্ত খুলবে

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে। উন্নত অবকাঠামো এবং আধুনিক লজিস্টিক সুবিধার মাধ্যমে দেশের এই খাতটি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা একথা জানিয়েছেন।

বিশেষ করে, মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অংশ হিসেবে জনসম্মুখে আসছে এই সমুদ্র বন্দরটি। জাপানের সহযোগিতায় নির্মাণ এই প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমাতে ও বড় জলযান চলাচলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। এর ফলে, মৎস্য শিল্পে সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে কোল্ড চেইন রক্ষা করে দ্রুত পরিবহনের মাধ্যমে।

মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্যগুলোর পরিবহন সময় অনেক কমিয়ে আনবে। এর ফলে, সতেজতা বজায় রাখতে পারবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের পণ্য পৌঁছানো আরও সহজ হবে।

অপর দিকে, মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে আমাদের ধরা মাছ দ্রুত রপ্তানি সম্ভব হবে। এর ফলে, আমরা ন্যায্য মূল্য পাবো, যা আমাদের জীবনের মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।

বিশ্বের বৈশ্বিক মাছের বাজারে বাংলাদেশ এখনো পুরোপুরি সফল হতে পারেনি, তবে মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) এই জন্য নতুন দিক দেখাচ্ছে। বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ বঙ্গোপসাগর থেকে আসে এবং এই সাগর নির্ভর করে বিশ্বের প্রায় ৪৫ কোটি মানুষের জীবনযাত্রা।

বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ এর সদস্য হিসেবে, বিভিন্ন ধরনের টুনা মাছ ধরার কোটা পায়। তবে, কিছু টুনা প্রজাতির জন্য কোটার অর্ধেকই অপূরণ হয়। এই সমস্যা সমাধানে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি লংলাইনার ফিশিং ভেসেল তৈরি বা আমদানি করছে, যা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা আরও কৌশলী করবে।

মাতারবাড়ির বন্দর চাঁকড়িয়া চিংড়ি শিল্পের জন্য নতুন বাজারের দরজা খুলে দেবে, যেখানে দেশের এবং বিদেশের বিভিন্ন বাজারে দ্রুত পণ্য পাঠানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে, রপ্তানি প্রক্রিয়া সময় ও খরচ কমানোসহ, ফিলে, স্ক্যালপ, স্যাম্পল মাছের মতো মানসম্পন্ন সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির মাধ্যমে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হতে পারে। পাশাপাশি, মিডার শক্তিশালী লজিস্টিক সেবাগুলি দেশের মধ্যে নতুন বিনিয়োগের জন্য সুযোগ তৈরি করবে বলে আশাবাদী।

পোস্টটি শেয়ার করুন