মঙ্গলবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অমিত শাহের মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি দাবি করেছেন, দেশের মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারণ হল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশ। তিনি যোগ করেছেন, এই পরিস্থিতির জন্য বাৎসরিক প্রজনন হার নয়, বরং সীমান্তপারের অনুপ্রবেশই দায়ী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, ভারতের ভোটাধিকার কেবলমাত্র ভারতের নাগরিকদেরই থাকা উচিত। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অমিত শাহ উল্লেখ করেছেন, দেশের মুসলিম জনসংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ বেড়ে গেছে, অন্যদিকে হিন্দুজনসংখ্যা কমেছে ৪.৫ শতাংশ। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, অনুপ্রবেশের ফলে এই পরিবর্তন ঘটেছে, প্রজননের পরিবর্তন বা জন্মহার দ্বারা নয়। তিনি আরো বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই ভারতের দুই প্রান্তে অনুপ্রবেশ শুরু হয়। এর ফলেই এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তন দেখা গেছে। অমিত শাহ স্পষ্ট করেন, অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যা কমে গেছে, কারণ অনেকেই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে মূলত অনুপ্রবেশের কারণে, প্রজনন নয়। তিনি বলেন, ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারীদের অন্তর্ভুক্তি সংবিধানের মূল চেতনা বিকৃত করছে। তার মতে, ভোটাধিকার কেবলমাত্র নাগরিকদেরই থাকা উচিত। কিছু রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে—এমন অভিযোগ উঠেছে তাঁর ভাষণে। তিনি প্রশ্ন করেন, গুজরাট ও রাজস্থানের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যে কেন অনুপ্রবেশ হয় না। অমিত শাহ আরও বলেন, অনুপ্রবেশ কোনো রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা। বিরোধীদের অভিযোগের তিরধারায় তিনি জানান, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) কেন্দ্রের অধীনে থাকলেও, ভৌগোলিক কারণে অনেক ক্ষেত্রে বেড়া দেওয়া সম্ভব হয় না। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলোর যৌথ দায়িত্ব থাকা উচিত। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু দল অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করছে কারণ তারা সেখানে ভোট ব্যাংক খুঁজে। শাহ এর মতে, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, আসামে এক দশকে মুসলিম জনসংখ্যা ২৯.৬ শতাংশ বেড়েছে, যা তিনি অবলীলায় বলেছেন, ‘অন্তত অনুপ্রবেশ ছাড়া এই বৃদ্ধি অসম্ভব’। পশ্চিমবঙ্গের কিছু জেলায় এই হার ৪০ শতাংশ এবং সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে কিছু স্থানীয় উপাত্তে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এগুলো স্পষ্ট প্রমাণ অতীতের অনুপ্রবেশের। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, এর মূল কারণও বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ।

পোস্টটি শেয়ার করুন