রবিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণঅভ্যুত্থানের চেতনাই ব্যর্থ হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যারা গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করেছেন এবং এর একক মালিকানা দাবি করেছিলেন, তারা ব্যর্থ হয়েছে। একইসঙ্গে যারা ৭১-এর চেতনা কে ব্যবহার করে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছিলেন, তারাও চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়েছে। এই মন্তব্য তিনি শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে দেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দেশের সকল মানুষ একত্রে সংগ্রাম করেছেন। যারা ৭১ এর আন্দোলনকে ব্যক্তিগত স্বার্থে দলীয়ীকরণ করতে চেয়েছে, তারা ইতিহাসের আস্তাকূড়ে পতিত হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারির গণঅভ্যুত্থানটি হলো শহীদদের রক্তের প্রত্যাশা, যা বাংলাদেশের মূল মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। দেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থা থেকে মুক্তি, সাংবিধানিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং হারানো মানবাধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছে। এসবের সংগ্রামী অভিপ্রায়ের সমষ্টিগত প্রকাশই হলো গণঅভ্যুত্থান। এটি শুধুমাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনের ফল নয়, এটি ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত স্বৈরাচারবিরোধী দীর্ঘ সংগ্রামের ফলস্বরূপ।

অভিযোগ করে তিনি বলেন, এক দল—আওয়ামী লীগ—কেবলমাত্র ভোট পাওয়ার জন্য নিজের দলের বিপক্ষে কোনো কথা বলছে না। যে দল দেশের নাগরিকদের হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের ইতিহাস যেন ভুলে না যাই। এরা বহুদিন ধরে গণতন্ত্রের ঘোর বিরোধী। তারা নিজেরা নানা ধরনের গণতান্ত্রিক ধারণা পোষণ করে, যা মূলত নিজেদের সুবিধার জন্য। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটের প্রত্যাশা নিশ্চিত হয়েছে। বিএনপি ও তার নেতৃত্বের সংজ্ঞা হলো জনমানুষের গণতন্ত্র। ভবিষ্যত রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে মেধা ভিত্তিক ও প্রযুক্তি নির্ভরশীল রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে বলে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

কৃষির আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যদি কৃষকরা মুখোমুখি হয়, তাহলে জাতির অর্থনীতি মুক্তি পাবে। কারণ, দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ কৃষক। বাংলাদেশের মাটি পুরো বছরই ফসল উপযোগী। তিনি সরকারের দলীয় কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড ও শিক্ষা কার্ডের গুরুত্ব ও ব্যবহার বিষয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

৩১ দফা বিষয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র আবেগী ও অপ্রণোদিত ধর্মীয় মিশ্রণ নিয়ে আমরা কোন নির্বাচন করব না। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এলে আমরা এগিয়ে যাব, এই পরিকল্পনা ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিলেন। ৩১ দফা হলো ন্যায়ের মুক্তির সনদ, যা বাংলাদেশের রাজনীতির মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মিরপুর বাংলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নারীনেত্রী ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন