মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এই সংলাপে তিনি দুই দেশের মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘর্ষ নিরসনে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়েছেন। আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, আসন্ন সোমবার আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগে রোববার (২১ ডিসেম্বর) এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। আনোয়ার একস্ট্রা পোস্টে বলেন, ‘আমি কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের নেতাদের প্রতি সংলাপ, প্রজ্ঞা এবং পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছি। এর মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে ও এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’ গত অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। তবে সম্প্রতি সীমান্তবর্তী একটি প্রদেশে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে থাই সেনারা গুরুতর আহত হওয়ার পর পরিস্থিতি আবার জটিল হয়ে উঠে। এরপর থেকে সহিংসতা আবার শুরু হয়েছে। সীমান্ত সংঘাতে উদ্বেগে পড়েছে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোর শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন স্কুল ব্যাংকক ও নমপেনে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক শিশু ও তরুণ বাড়ির বাইরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, এর ফলে তাদের মধ্যে উদ্বেগ দিন দিন বেড়ে চলেছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো পান্না ত্রিভুজ নামে বিতর্কিত অঞ্চলের দাবি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব। এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বহু বছর ধরে চলমান এই দ্বন্দ্বে মাঝে-মধ্যেই সৈন্যরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ—যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া—বরাবর আলোচনার উদ্যোগ নিলেও কোনো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হয়নি। এই বছরের জুলাইয়ে জোরালো সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সৈন্যরা লিপ্ত হয়। আড়াই দিনের সংঘাতের পরে মার্কিন মধ্যস্থতায় প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি হয়। অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। তবে দেড় মাসের বেশি সময় যেতে না যেতেই ডিসেম্বরের শুরুতে আবার নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘাতে প্রাণহানি এবং সীমান্তের বহু এলাকায় বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এতে করে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার কারণে বাড়ি থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। শুক্রবার সরকারের নির্দেশনায় থাইল্যান্ডের সাতটি প্রদেশের প্রায় এক হাজার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ও শান্তির জন্য শিক্ষার্থীরা প্রত্যাশা করছে, তারা দ্রুত আবার নিজেদের স্কুলে ফিরে যেতে চান।





