রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্টে বিশৃঙ্খলা: আয়োজনের ব্যর্থতা দায়ী

ফরিদপুরের জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে ঘটে গেল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেমসের কনসার্টটি অভাবনীয় বিশৃঙ্খলা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে বাতিল করতে বাধ্য হন আয়োজকেরা। এই ঘটনার জন্য তারা প্রধানতঃ পরিকল্পনা ও নিরাপত্তার অভাবকে দায়ী করেছেন।

জানানো যায়, জেমস ও তার দল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ফরিদপুরে এসে পৌঁছায় এবং শহরের নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের গেস্ট হাউসে অবস্থান করেন। যখন তারা অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, তখনই স্থানীয় সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, পরিস্থিতি বেশ খারাপ। রাত সাড়ে 10টার দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি বিশৃঙ্খলার রূপ নেয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকায় আয়োজকেরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা ব্যর্থ হন। এই পরিস্থিতিতে, জেমস তড়িঘড়ি করে গাড়িতে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষুব্ধ ও প্রবল রাগে গেস্ট হাউস ছেড়ে দ্রুত গাড়িতে উঠছেন এই কিংবদন্তি।

আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মূলতঃ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের জন্য নিবন্ধিত হলেও, জেমসের আসার খবর পেয়ে হাজারো লোক বিনা অনুমতিতে স্কুল প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং একদল লোক দেয়াল টপকে অনুষ্ঠানে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকজনের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে মঞ্চ ও স্কুল ভবনে ব্যবহৃত আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আয়োজক কমিটির প্রায় ২৫-৩০ জন আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেমসের মুখপত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন জানিয়েছেন, মঞ্চে উঠার আগে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে যে, নিরাপত্তার কারণে তিনি তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সাধারণ দর্শকদের আনন্দে দারুণ ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়ে, যারা প্রিয় শিল্পীর কনসার্ট উপভোগ করতে পারেননি। একইসঙ্গে আয়োজকদের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ঘাটতির জন্য সংগীতপ্রেমীরা তীব্র সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। জেমস নিজেও উল্লেখ করেছেন, এই ধরনের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থতা নিশ্চয়ই দুঃখজনক। মূলতঃ পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে ফরিদপুরের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান একটি দুঃখজনক স্মরণে পরিণত হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন