মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও ইসলাম ধর্ম নিয়ে অনলাইনে কটূক্তির প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেন সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা। তারা দেশব্যাপী অনলাইন ব্লগার ও এক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির’ দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, “কিছু সংখ্যক কুলাঙ্গার ব্লগার আছে যারা নাস্তিক-মুরতাদ, ধর্ম মানেনা এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে প্রতিনিয়ত কটূক্তি করে যাচ্ছে। এদেরকে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। এই নাস্তিকগুলো আমাদের সমাজকে কলুষিত করছে। আমরা দেখেছি সুব্রত শুভ, সাইফুর রহমান, আরিফ জেবতিক, এমডি মিজানুর রহমান, শাহরিয়ার কবির, শাহমিরান আহমেদ, এমডি আরিফুল ইসলাম, সৈয়দা মহসিনা ডালিয়া, শোভন রেজা, সুষুপ্ত পাঠক, রেহানা আক্তার, নাদিয়া ইসলাম সহ আরও অনেকে আমাদের প্রাণপ্রিয় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে প্রতিনিয়ত নানাবিধ কটূক্তি করে লেখালেখি করছে। এটা ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারাদেশে নানা ধরনের সংস্কার কাজ করছে, তবে তাদের উচিত বাংলাদেশ থেকে সকল নাস্তিক মুরতাদদের বিতাড়িত করা। এই কুলাঙ্গার গুলো এভাবে তাদের বিদ্বেষপূর্ণ লেখালেখি চালাতে থাকলে আমাদের সমাজ তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। তারা কিভাবে পারে কোটি কোটি মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে? তাদেরকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে এদেশ থেকে। তাই আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এসকল নাস্তিক ব্লগার, নাস্তিক্যবাদী ব্লগ, ওয়েবসাইট ও ম্যাগাজিনগুলো অবিলম্বে ব্যান করার জোর দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে হেফাজতের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি বশিরুল্লাহ বলেন, “এই কুলাঙ্গার নাস্তিক গুলো সমাজে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করছে অনেকদিন ধরেই। অনেকগুলো নাস্তিক্যবাদী ওয়েবসাইট ও ম্যাগাজিন রয়েছে যেমন – এথিস্ট নোট, এথীস্ট জাংশন, ধর্মকারী, নাস্তিক্য, সংশয়, মুক্তমনা, ধী, সমকামী, ঘেঁটুপুত্র, ডেইলি এথিস্ট, সচলায়তন ইত্যাদি। এদের মূল উদ্দেশ্যই হলো ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি ছড়িয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করা। নতুন বাংলাদেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হলে ইসলামের শাসন প্রতিষ্ঠা করা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই নাস্তিক ব্লগ ও ম্যাগাজিনগুলোকে চিরতরে বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। ৩৬০ আউলিয়া ও ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার শাস্তি অনেক কঠোর হতে হবে যাতে করে আর কেউ এধরনের কাজ করতে সাহস না পায়। এসমস্ত কুলাঙ্গারগুলোকে প্রকাশ্যে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।”
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সময় ‘নাস্তিক বিরোধী’ স্লোগান দেন এবং অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে নাস্তিক্যবাদী ব্লগ, ওয়েবসাইট ও ম্যাগাজিনসমূহ অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হয় এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করা হয়।