বৃহস্পতিবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাসুমের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের জয়ের গল্প

কিংসটাউনের গত বছর অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নাসুম আহমেদের পারফরম্যান্স সবাই মনে রাখতে পারেন। তখন তিনি দলে ছিলেন না, তবে সেমিফাইনালে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অবশ্যই দেখার মতো ছিল তার উপস্থিতি। বাংলাদেশ সে ম্যাচটি হেরেছিল মাত্র ৮ রানে, ফলে সেমিফাইনালে যাওয়ার দৌড় থেকে বাদ পড়ে।

অবাক করে দিয়ে, এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের আসন্ন সুপার ফোরের আশা এখনো টিকে রয়েছে। আর এজন্য মূলত ধন্য নাসুমের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। গত ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখলে বোঝা যায়, তার ব্যাপক অবদানই দলের জয়কে সহজ করে দিয়েছে।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮৭ রান করে, যা দেখে মনে হচ্ছিল ২০০ পেরোবে দল। তবে পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ৬৭ রান করে ৪টি উইকেট হারিয়ে, যেখানে শেষ ১২ বলের মধ্যে ৬টি ডট বল ছিল। এই সময়ে রান গড়িয়েছে মাত্র ১৫ এবং উইকেট নিয়েছে একটি।

এছাড়াও, ব্যাটসম্যানরা শেষটায় ভালো করার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন, কারণ শেষের দিকে মানসিক চাপ বেশ বেড়ে যায়। আফগানিস্তানের জন্যও এটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল ১৫৫ রান। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য এটা মোটেও অঘটন ছিল না, কারণ শেষের সময়ে দলের বোলাররা খুবই কার্যকরভাবে খেলেন।

বিশেষ করে, প্রয়োজনের মুহূর্তে নাসুমের ভরসা ছিল দল। তিনি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিপটে বোলিং করে প্রাথমিক ধাক্কা দেন। নতুন বলে তার বোলিং ছিল খুবই নিখুঁত—সাধারণত স্পিনাররা টিকে থাকেন না এই পরিস্থিতিতে, কিন্তু নাসুম তার স্টাম্পের কাছাকাছি বল করে এলবিডব্লিউয়ের সুযোগ তৈরি করেন। প্রথম বল থেকেই তিনি সঠিক লেংথে বল করে பார்த்தেন, এবং তার শেষ বলটি ছিল উইকেটের জন্য দুর্দান্ত।

এভাবে, প্রথম বলেই এলবিডব্লিউর মাধ্যমে উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপর সব মিলিয়ে তার বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ৩-১-৭-২। এটি বুঝিয়ে দেয় যে, তার খুবই কার্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই ম্যাচে।

বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নবীন এই তারকা দ্রুত উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা। তাছাড়া, নতুন বলে তার স্টাম্পের কাছাকাছি ডেলিভারির দক্ষতা ছিল উল্লেখযোগ্য, যা এলবিডব্লিউ সুবিধা দেয়। ম্যাচে প্রথম বল থেকেই তিনি এই ধরনে বল করে, আফগানিস্তানের ওপরে চাপ সৃষ্টি করেন।

অফস্পিনার তাসকিনের পরে, নাসুমের দ্বিতীয় ওভার মাত্র ৫ রান দিয়ে খুবই ভালো সহায়তা দেয়। এরপর তৃতীয় ওভারে তিনি ২ রানে এক উইকেট শিকার করেন, সেটি ছিল ইbrahim জাদরানের এলবিডব্লিউ। তার এই গুরুত্বপূর্ণ উইকেটের জন্য বলের অ্যাঙ্গেল ও স্পিন ছিল যথাযথ। তখন আফগানিস্তানের স্কোর দাঁড়িয়ে ছিল ৫ ওভারে ২ উইকেটে ২০, এবং তার বিশ্লেষণ ছিল ৩-১-৭-২।

সবমিলিয়ে, ধারাভাষ্যকার তখন বলছিলেন, বাংলাদেশ আরও ১০-১৫ রান যোগ করতে পারত, যা মূলত আফগানিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তবে এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়, নাসুমের মধ্যে ছিল পড়ন্ত উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা, যা শেষমেশ বাংলাদেশকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিণত করল।

পোস্টটি শেয়ার করুন