প্রিয়াঙ্কা চোপড়া শুধুমাত্র দেশের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরে হলিউডেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এক অনুপ্রেরণাদায়ক গল্পের অংশ হয়ে। তার পথচলা সহজ হয়নি; অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে আজ তিনি বিশ্বের একজন জনপ্রিয় তারকা। বলিউডে নিজের অবস্থান গড়ে তুলতে তার সংগ্রাম এবং সফলতার গল্প নিঃসন্দেহে তরুণ প্রজন্মের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে।
একটি অনুষ্ঠানে তিনি খুলে বলেন, সিনেমা শিল্পে নতুনদের জন্য স্থান পেতে অনেক সময় একেবারেই কঠিন ছিল। এই কঠিন অভিজ্ঞতাই তাকে প্রেরণা যোগিয়েছে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে।
২০০০ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতা জিতে তার বিনোদন জগতে যাত্রা শুরু হয়। ২০০২ সালে হিন্দি ও তামিল সিনেমায় অভিনয় শুরু করেও বলিউডে নিজের জন্য জায়গা করে নেওয়া কঠিন ছিল। প্রিয়াঙ্কার ভাষ্য, ‘বলিউড একসময় বাইরের লোকদের জন্য বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিন ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে আসা শিল্পীরা, পরিচালকরা উঁচু স্থানাধিকারীদের মধ্যে একটি গোষ্ঠী তৈরি করে নিয়েছিলেন। কোনও পরিচয় বা সংযোগ ছাড়া সুযোগ পাওয়া বেশ কষ্টের। তবে আমি হাল ছোইনি, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলাম, ব্যর্থতা মানতে রাজি নয়, তাই আমি লেগে থাকি।’
এই সংগ্রাম ও অধ্যাবসায়ের ফলস্বরূপ, ২০১৫ সালে তিনি তার নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘পার্পল পেবল পিকচার্স’ গড়ে তোলেন। প্রিয়াঙ্কা বললেন, ‘আমি যে জায়গা পাইনি, সেই জায়গাগুলিকে অন্যদের জন্য উন্মুক্ত করতে এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি। এমন অনেক মেধাবী নির্মাতা ও লেখক রয়েছেন যারা সুযোগ পায় না, তাদের পাশে দাঁড়াতেই এই প্রচেষ্টা।’
এছাড়াও, তার প্রথম সিনেমা ছিল ভোজপুরি ভাষার ‘বাম বাম বল রহা হ্যায় কাশি’ (২০১৬)। এরপর মারাঠি ভাষার ‘ভেন্টিলেটর’ সিনেমা জিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। আরও নির্মাণ করেন ‘পাহুনা: দ্য লিটল ভিজিটর্স’ (২০১৮), ‘পানি’ (২০১৯) এর মতো বিভিন্ন ভাষার সিনেমা। তার অভিনয় ও প্রযোজনার কাজ রয়েছে ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ ও ‘দ্য হোয়াইট টাইগার’ সিনেমাগুলিতেও। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হয়েছে।
প্রিয়াঙ্কা সম্প্রতি শেষ করেছেন ‘সিটাডেল’ সিরিজের দ্বিতীয় মৌসুমের শুটিং। অচিরেই তাকে দেখা যাবে ফ্র্যাঙ্ক ই. ফ্লাওয়ার্সের অ্যাকশন-ড্রামা সিনেমা ‘দ্য ব্লাফ’-এ। পাশাপাশি ভারতের চলচ্চিত্রেও ফিরে আসছেন, এস. এস. রাজামৌলির আলোচিত ছবি ‘এসএসএমবি ২৯’-তে। সেখানে তার সহশিল্পী হিসেবে থাকবেন মহেশ বাবু ও পৃথ্বীরাজ সুকুমারন।