সোমবার, ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদাগাস্কারে সেনাদের একাংশ জেন-জি বিক্ষোভে যোগ দিলেন

মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোতে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে এবার অংশ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর একটি অংশ। এরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, যারা বিদ্যুৎ ও পানির সংকটের কারণেই গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে গত শনিবার, তরুণ নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা প্রথমবারের মতো রাজধানীর মে থার্টিন চত্বরে প্রবেশ করে জমায়েতের পরিমাণ ছিল আকাশচুম্বী। এই বিক্ষোভের প্রভাব বেড়েই চলেছে, এবং এর প্রেরণা ইউরোপ-আশিয়ান অঞ্চলের অন্যান্য দেশ যেমন কেনিয়া ও নেপালেও চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। এসব বিক্ষোভের একটি নাম ‘জেন-জি।’ স্বাভাবিকভাবেই, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

পুলিশ প্রথমে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়লেও, কিছু সময় পর সামরিক সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এই সময়ে, বিক্ষোভকারীরা সেনাসদস্যদের স্বাগত জানিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। এর আগে আন্তানানারিভো শহরে সেনা ব্যারাকে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সেনাসদস্যরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি সমর্থন করে সংহতি প্রকাশ করেন—এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা, কারণ ২০০৯ সালে রাজোয়েলিনার উত্থানে এই ইউনিটের ভূমিকা ছিল কেন্দ্রীয়।

অন্যদিকে সোয়ানিয়েরানায় একটি সেনা ঘাঁটিতে ভিডিও বার্তায় সেনাসদস্যরা বলেন, ‘সেনা, আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ, চলুন এক হয়ে কাজ করি। আমাদের বন্ধুরা, ভাইবোনদের গুলি করার আদেশ মানা হবে না।’ তারা আরও বলেন, ‘ফটক বন্ধ করে দিন এবং আমাদের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করুন। ঊর্ধ্বতনদের আদেশ মানবেন না। যারা আপনাদের সহযোদ্ধাদের ওপর গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছে, তাদের দিকে অস্ত্র তাক করুন, কারণ আমাদের মারার পরেও তারা আমাদের পরিবারের খেয়াল রাখবে না।’

কতজন সেনা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীমন্ত্রী দেরামাসিনজাকা মানান্টোওয়া রাকোতোআরিভেলো শান্তি বজায় রাখতে ও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘যেসব ভাই আমাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন, তাদের আমরা আলোচনায় এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।’ তিনি আরও জানান, মালাগাসির সেনাবাহিনী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় রয়েছে এবং এটি জাতির শেষ রক্ষা করার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

শুক্রবার, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের দমন করতে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাঁজোয়া যান ব্যবহার করলে সেখানে বেশ কিছুজন আহত হন। এই সংঘর্ষে পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করছে দেশের ভবিষ্যত স্বস্তির দিকে।

পোস্টটি শেয়ার করুন