ইসরায়েলের ভয়াবহ সামরিক অভিযান ও তার ফলে খাদ্য, ওষুধ এবং জীবনোপকরণ দ্রব্যের অভাবে কষ্টে ভুগছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গাজায় ঢুকছে ৬০০ ত্রাণবাহী ট্রাক। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে এক অত্যন্ত হামলার মাধ্যমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এর পর দিন, অর্থাৎ ৮ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করা হয়। এই অভিযানের ফলে গাজার খাদ্যসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহ অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
অভিযানের শুরু থেকেই গাজার মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ মানুষ সরাসরি খাদ্য ও ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল ছিল। সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দুই বছরে, ক্ষুধা এবং অপুষ্টিজনিত কারণে গাজায় প্রায় ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যার অধিকাংশই শিশু।
ত্রাণের মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয় রাফা সীমান্ত ক্রসিং। এর পাশাপাশি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবনায় ইসরায়েল ও আল-কায়েদার সমর্থন পেয়ে, ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই যুদ্ধবিরতির সময়ে প্রথম তিন দিনে, প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছিল গাজায় বন্দি থাকা সব জীবিত ও মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার তিন দিনে সব জীবিত জিম্মি স্বাভাবিকভাবে ফিরিয়ে আনা হলেও, মাত্র ৪ জন মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইসরায়েল ত্রাণ সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে, যখন হামাস মৃত জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে আনতে শুরু করে, তখন ইসরায়েলের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসে। তাদের ভাষ্য, যদি হামাস তাদের চুক্তির শর্ত পালন না করে, তবে গাজায় প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করবে।
এই পরিস্থিতি নিয়ে সারা বিশ্বে উদ্বেগ বাড়ছে, কারণ গাজার পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে। সূত্র: রয়টার্স