জুলাই জাতীয় সনদকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংবিধানিক মান্যতা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ স্পষ্ট করে বলেছেন, এই প্রয়াসটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের কাজ কেবল আবেগ বা অনুভূতির ভিত্তিতে চলে না, এটি আইন, বিধান এবং নিয়মের ভিত্তিতে চলে। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউট্যাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থান: তরুণদের ভাবনা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, যদিও কেউ বলছেন যে, ১৭ জুলাই স্বাক্ষরিত জাতীয় সনদকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এখনো কোনও সুপারিশ দেয়নি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সম্প্রতি এই কমিশন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং এর আগেও তাদের কাছে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য একটি সরকারী আদেশ জারি হবে, যেখানে গণভটের বিষয়েও একটি অধ্যাদেশ আনা হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে, এই আইনের প্রয়োগের জন্য ‘এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার’ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে এই সনদ জারি করা যেতে পারে। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, বাংলাদেশের সংবিধানে এই ধরনের অধিকার রাষ্ট্রপতির বা সরকারের কিছু ব্যক্তির নেই। ‘প্রধান উপদেষ্টা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না, কারণ এটি সংবিধানের লঙ্ঘন,’ বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেন রাজনৈতিক আবেগতাড়িত না হই, এই জন্য সব পক্ষকে আমি আহ্বান জানাব। আমাদের মূল সমস্যা হলো মানসিক ও সাংবিধানিক সংস্কার। যতক্ষণ না আন্তঃরাষ্ট্রীয় ভিত্তিতে আমরা মানসিক পরিবর্তন আনতে পারি, ততক্ষণ এই আইনি ও সাংবিধানিক সংস্কার অপ্রযোজ্য রয়ে যাবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ১৭ অক্টোবরJuly সনদ স্বাক্ষরিত হলেও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এতে উপস্থিত ছিল না। তবে, গণভোটের পরিকল্পনা ছিলো বিএনপির মূল প্রস্তাবনা। বর্তমানে কিছু রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে আলোচনা করছে, আশা প্রকাশ করে বলেন যে, অচিরেই সম্ভবত সেই দাবিদাওয়ার জন্য একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ সবশেষে বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমাদের মানসিক সংস্কার। আমরা বিভিন্ন উপায়ে আইন ও সাংবিধানিক সংস্কার করছি, কিন্তু তা কার্যকর হওয়ার জন্য প্রয়োজন মানসিক পরিবর্তন। যদি এই ভিত্তিতে আমরা এগোতে না পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যত অন্ধকার।





