জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অসাধারণ স্বাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন ট্রাইব্যুনাল, এবং তারা আগামী ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এই মামলার যুক্তিতর্কের শেষ পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। এই আইনী প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রসিকিউশনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তাদের সংক্ষিপ্ত সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। উভয়ই তীব্রভাবে এই তিন আসামির জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান। করজোরে সমর্থন দেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান ক্যামের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত যুক্তিন বাড়ি।
এ মামলার অন্যতম আসামি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, যিনি নিজের দায় স্বীকার করে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সেটি ট্রাইব্যুনালে স্বীকারোক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ ও মঈনুল করিম। গুরুত্বপূর্ণ এই পাঁচ দিনের যুক্তিতর্কের সময় তারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ঘটনা পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকারের বিভিন্ন অবর্ণনীয় অপরাধের তথ্য ও প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন।
মামলার মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়। এই মামলা দুয়ার অপকর্মের অভিযোগে গঠিত হয় ১০ জুলাই, যেখানে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করা হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৭। এর মধ্যে তথ্যসূত্রের সংখ্যা ২ হাজার ১৮০, দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫০০ এবং শহীদদের তালিকা সম্পন্ন হয়েছে ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায়। একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ইতিমধ্যে ৮১ জন সাক্ষী এই মামলার স্বাক্ষ্য দেন।
গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এ মামলার প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেয়। আগামী ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে সংশ্লিষ্ট সবাই।





