ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন তার জীবনের সংগ্রামী পথের অভিজ্ঞতা শিরোনাম করে বললেন, কীভাবে তিনি ডিভোর্স, রিহ্যাব সেন্টার, তীব্র বিষণ্ণতা, সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি এবং সন্তান অধিকার লড়াই করে একজন পারিপূর্ণ মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আয়োজিত ‘কথামালা-১৩’ নামে এক আলোচনাসভায় তিনি নিজের জীবনের অজানা কাহিনী প্রকাশ করেন। এ অনুষ্ঠানে ‘অভিনয়, অভিনয়শিল্পী ও আমার জীবন’ শিরোনামে বক্তব্য দিয়ে বাঁধন জানিয়েছেন, কেমন ছিল তার ছেলেবেলা ও তরুণ সময়ের সংগ্রাম। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি উপলব্ধি করেন, অল্প বয়সে পড়াশোনা শেষ করাটা কত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত জীবনের কঠিন সময়গুলো তাকে নতুন করে নিজেকে খুঁজে দেখার সুযোগ দিয়েছে। এক সময়ে তিনি কেবল অর্থের জন্য অভিনয় করলেও ধীরে ধীরে মন দিয়ে কাজ করতে শুরু করেন। এমনকি একজন থেরাপিস্টের প্রশ্নে নিজের নতুন দিকসে পরিচিতি পান। এরপর ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমায় তার সফলতা তাকে নতুন করে চিনতে শেখায়। তবে এর বাইরে জীবনের অন্ধকার সময়ের কথা বলতে গিয়ে বাঁধন জানান, তাঁর বিয়ে হয় ১৯ বছর বয়সে। ডিভোর্সের পর তিনি সিভিয়ার ডিপ্রেশনের রোগী হয়ে উঠেন, সঙ্গে সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি ছিল। তিনি কল্পনা করেন, ক্রনিক ডিপ্রেশনের রোগী হওয়া এটাই বাস্তবতা, এবং নিয়মিত অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ খান। এ কথা বলে অনেকের মনে প্রতিক্রিয়া চিত্তাকর্ষক হলেও তিনি নিজের স্বস্তি খুঁজে পান। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে নিজেকে ‘ধ্বংসস্তূপ’ বলে আখ্যায়িত করে বাঁধন বলেন, তখন আমি একেবারে ভেঙে পড়েছিলাম। বিষণ্ণতা ছিল আমার জীবনের একমাত্র সঙ্গী। ২০১৮ সালে এক বড় ঘটনা তার জীবনকে নতুন দিক দেয়। সন্তান অধিকার বিষয়ক আইনি লড়াইয়ে তিনি বিজয়ী হন, যেখানে তার স্বামী সন্তান নেওয়ার জন্য তাকে প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিল। এ সময় বাঁধন নিজের অক্ষমতাকে হার মানিয়ে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। অবশেষে, তিনি মেয়ের সম্পূর্ণ অভিভাবকত্ব পান, যা এক পর্যায়ে সম্ভবত উপমহাদেশের জন্য এক যুগান্তকারী রায় ছিল। এই জয়ে তিনি অনুভব করেন, সমাজের নির্ধারিত নিয়মের বাইরে গিয়ে নিজের অধিকার নিজেকেই বুঝে নিতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই অনুষ্ঠানে বাঁধন বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন, যা তার জীবনের সমসাময়িক দিকগুলোকে আরও আলোকিত করে।





