বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্ত অনুযায়ী পাট রপ্তানিতে কিছু শর্ত আরোপ করে অলিখিতভাবে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে মত প্রকাশ করেছেন পাট রপ্তানিকারকরা। তারা বলছেন, এতে করে কৃষক, ব্যবসায়ী, পাট শ্রমিক ও রপ্তানিকারকদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংকের সুদ বৃদ্ধির কারণে বাজারে অস্থিরতা চলছে। এই পরিস্থিতিতে পাট রপ্তানিকারকদের ডেকে আনিয়ে অবিলম্বে এই শর্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যথায়, তারা কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার বাংলাদেশের বিজেএ’র নারায়ণগঞ্জ অফিসের ৪র্থ তলায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএ) ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব মন্তব্য করেন পাট ব্যবসায়ীরা। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫০০ জনের বেশি ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারক অংশ নেন।
সভায় দেশের শীর্ষ পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গণেশ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে পাট রপ্তানি করতে দেয়ার মাধ্যমে মূলত পাটের অলিখিত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে এখন পর্যন্ত রপ্তানি অস্বীকৃতি জানিয়ছেন অনেক রপ্তানিকারক, যদিও লটের এলসি আগের মতোই খোলা রয়েছে। ১৯১০ ও ১৯১৫ সালে বিদ্যমান পাট নিষেধাজ্ঞার সময় কাটজুট পাটের উপর সেই নিষেধাজ্ঞা আরোপিত ছিল না, অথচ এখন সেটিও শর্তসাপেক্ষে রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অনার্যদ্রুত এই শর্ত প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে পাটের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে, মূল্য কমে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে নেমে আসতে পারে। উৎপাদন কম হওয়ায় বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন ও জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের দাবি অনুযায়ী ৭ থেকে ৮ লাখ বেল পাট রপ্তানি এখনো বন্ধ রয়েছে। এর ফলে কৃষকদের স্বার্থ, ব্যবসায়ীদের ক্ষতি এবং শ্রমিকদের অক্ষমতা প্রকট হচ্ছে। তাই এই শর্ত দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজেএর সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন আকন্দ। তিনি সভা শেষে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন এবং বিগত অর্থবর্ষের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুমোদন করেন।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার আলমগীর কবির বলেন, ‘কাঁচা পাটের রপ্তানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা সংকটে পড়ে গেছেন। অনেকেই ঋণে জর্জরিত। এখন দুই মাসেও একটি কাঁচা পাট রপ্তানি সম্ভব হয়নি। শ্রমিকদের বাধ্য হয়ে মজুরি দিতে হচ্ছে, যেখানে রপ্তানি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা শীঘ্রই মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। যদি ১০ দিনের মধ্যে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এস এম সাইফুল ইসলাম পিয়াস, ভাইস চেয়ারম্যান মো. তারেক আফজাল, কার্যকরী সদস্যরা মো. ফাহাদ আহমেদ আকন্দ, শামীম আহমেদ, এস এম মনিরুজ্জামান (পলাশ), খাইরুজ্জামান, মো. কুতুবউদ্দিন, শেখ ঈমাম হোসেন, এস এম হাফিজুর রহমান, বদরুল আলম, এইচ এম প্রিন্স মাহমুদ, মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, মো. নূর ইসলাম, মো. আলমগীর খান, রঞ্জন কুমার দাস ও এসএম সাইফুল ইসলাম সহ অন্যরা।





