সোমবার, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন অবধারিত হয়ে উঠছে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

অর্থনীতিবিদ ও গণনীতি বিশ্লেষক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নির্বাচন এখন ক্রমশ একটি অবধারিত ঘটনা হিসেবে পরিণত হচ্ছে। গতকাল শনিবার রাজশাহীতে ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনি উদ্যোগ’ শীর্ষক আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করা হয় পবার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে, যেখানে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শুরু করে বিকাল আড়াইটা পর্যন্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচন এখন ধাপে ধাপে এক অপরিহার্য ঘটনায় রূপান্তরিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সাধারণভাবে প্রত্যেকেই আশা করছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে সম্পন্ন হবে এবং ফলাফল সেই দেশের ভবিষ্যত উন্নয়নে ভিত্তি তৈরি করবে। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী অঞ্চলের সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা, আইনজীবী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ীরাও। তারা সংস্কার, সুশাসন, নিরাপত্তা, প্রার্থীদের নির্বাচন, কর্মসংস্থান, শিক্ষা реформ, স্বাস্থ্য সেবা, আঞ্চলিক বানিজ্য প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। এছাড়া পর্যায়ক্রমে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের বিষয়ে ও সরকারের প্রত্যাশার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। সভা শেষে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অংশগ্রহণকারীরা চান এমন একটি নির্বাচন যেখানে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। এসময় ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, সোশ্যাল মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার রোধ, এবং যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরও বলেন, যদি নির্বাচনের খরচ কমানো না যায়, তবে দুর্নীতির মান কমানো কঠিন হবে। জনগণের প্রতিনিধিরা প্রত্যেক বছর তাদের দায়িত্ব পালনের হিসাব দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন। রাজশাহী সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিষয় উঠে আসে এই আলোচনা থেকে। প্রথমত, রাজশাহীতে মরুকরণ বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, উত্তরাঞ্চলে পদ্মা ও তিস্তার পানি সরবরাহের সমস্যা। তৃতীয়ত, জ্বালানি সংকট, বিশেষ করে গ্যাসের অভাব। আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতা। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নকে সামনে রেখে বিভিন্ন অংশের গুরুত্বারোপ হয়। স্বাস্থ্য, মানসম্পন্ন শিক্ষা, দরিদ্র মানুষের সামাজিক সুরক্ষা, এবং সর্বশেষ নিরাপত্তার বিষয়গুলোও আলোচিত হয়। নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পায়, যেখানে শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ব্যবসায়িক নিরাপত্তার বিষয়গুলোও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা যদি শক্তিশালী না হয়, তবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চালানো কঠিন হয়ে পড়বে—এমনটাই মনে করে অংশগ্রহণকারীরা। সামগ্রিকভাবে, এই সব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে দেশ এগিয়ে যেতে পারে একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে।

পোস্টটি শেয়ার করুন