সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রায়েরবাজার থেকে ১১৪ জন শহীদের লাশ উত্তোলন শুরু

১৬ ডিসেম্বরের বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করা শহীদদের স্মরণ করে, রায়েরবাজারের কবরস্থান থেকে তাদের লাশ উত্তোলনের কার্যক্রম শুরু করেছে পুলিশ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ (সিআইডি)। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নিহত শহীদদের পরিচয় শনাক্ত করার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হচ্ছে।

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আজ সকাল থেকেই মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছে। এসব লাশের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের পর, যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের দাফন সম্পন্ন করা হবে।

অধিকর্তা বলেন, ‘অজানা অবস্থায় শুয়ে থাকা এই শহীদদের পরিচয় প্রকাশের জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের দেশ ও সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এ কাজের মাধ্যমে দেশের স্বাধিকার ও ইতিহাসের গৌরবময় অংশীদারদের সম্মানার্থে করণীয়।’

জানা গেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার (ওএইচসিএইচআর) সাহায্য নিয়ে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে লুইস ফন্ডিব্রাইডা ঢাকায় এসে এই পদ্ধতিতে মরদেহ শনাক্তের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি জানান, বিভিন্ন বৈঠক ও আলোচনা শেষে অজ্ঞাত শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকেও বিস্তারিত আবেদন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে চালানো এই কার্যক্রমে কবরস্থানে থাকা লাশগুলো থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ চলবে।

সিআইডি প্রধান আরো বলেন, ‘বর্তমানে ১০ জন আবেদন করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, শহীদের সংখ্যা ১১৪ জনের বেশি। প্রকৃত সংখ্যা পরে ঠিক হবে লাশ শনাক্তের পর।’ তিনি আরো জানান, যেসব মরদেহ শনাক্ত হবে, তাদের পোস্টমর্টেম ও ডিএনএ পরীক্ষা পূর্ণ করা হবে। তারপর ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী সম্মানজনক দাফন সম্পন্ন হবে।

এছাড়াও, তিনি জানান, যদি কেউ পরিবারের পক্ষ থেকে শহীদদের পরিচয় চায় বা ডিএনএ নমুনা দিতে রাজি হয়, তবে তা সহজেই সম্ভব হবে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় হটলাইন নম্বরও শিগগির একটি প্রকাশ করা হবে।

গত ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাহিদুল ইসলামের আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের নির্দেশনায় এই লাশ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আদালতের নির্দেশনায় ও আয়োজনের মাধ্যমে আগামী বছরের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে অজ্ঞাত শহীদদের মনোনয়ন ও পরিচয় শনাক্তের জন্য এই পদক্ষেপ গৃহীত হয়। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত ১১৪ জন শহীদানকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়। এখন তাদের পরিচয় নির্ণয়ে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে কাজ চলছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন