বিশ্ব রাজনীতির নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করতে পারে এমন এক ব্যাপক পরিকল্পনার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া, চীন এবং ভারতকে কেন্দ্র করে একটি নতুন জোট গঠনের পরিকল্পনা করছেন, যা বেশ আলোচনা এবং উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই জোটের নাম ‘কোর-৫’ বা সি-৫ বলে জানা যাচ্ছে, এবং এতে জাপানও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। তবে, এখনো পর্যন্ত এই সংক্রান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি বা ঘোষণা হয়নি। কারণ, এমন এক পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, এই ধরনের কোনো গোপন বা পরিকল্পিত নথি নেই। তারপরও, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে এই খবরের গুরুত্ব অনেক বেশি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘পলিটিকো’ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক এক জাতীয় নিরাপত্তা রিপোর্টে এমন এক সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে। এই নতুন জোটটি মূলত জি-৭ এর আদলে একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা, যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা হবে। এর মাধ্যমে ইউরোপের পরিচালিত ঐতিহ্যবাহী জোটগুলোকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই জোটের মূল এজেন্ডা থাকবে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিশেষ করে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়টি। তবে, এই পরিকল্পনা ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ইউরোপীয় মিত্ররা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনায় ইউরোপের কোনো স্থান নেই, যা তাদের মধ্যে এক ধরনের শ্রেণীবিভাগ আর গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সেটি বর্তমান মার্কিন নীতির চেLam চীনের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে পারে। একদিকে, এমন এক জোটের সম্ভাবনা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি মার্কিনিদের চীন ও রাশিয়ার প্রভাব কমানোর লক্ষ্য থেকে ভিন্ন পথে নিয়ে যেতে পারে। তবে, হোয়াইট হাউস এ বিষয়টি অস্বীকার করে জানিয়ে দিয়েছে যে, এই ধরনের কোনো গোপন নথি বা পরিকল্পনা নেই। প্রেস সেক্রেটারি হান্না কেলি স্পষ্ট করে বলেছেন, সরকারি কোনো গোপন বা বিকল্প নথি নেই। তবে, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে মত ভিন্ন। তারা মনে করেন, ট্রাম্পের মতো শক্তিশালী একজন নেতা যিনি আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে সরাসরি কাজ করতে পছন্দ করেন, তাঁর জন্য এমন এক পরিকল্পনা অচেনা কিছু নয়। সব মিলিয়ে, এই গুঞ্জন বিশ্ব রাজনীতিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে, যেখানে রাশিয়া, চীন, ভারত ও জাপানের মতো শক্তিগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এক নতুন ‘সুপারক্লাব’ – যা সাবধান করে দিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্বকে।





