রবিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের কারাদণ্ড

পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির বিশেষ আদালত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দেশটির তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তোষাখানার seconda মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। এই মামলাটি প্রথমে আলোচনায় আসে পাকিস্তানে বিলাসবহুল আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড বুলগারির দামি গহনা সংগ্রহের ঘটনায়। ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরবের একটি সরকারি সফরের সময়, যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান বিনা খরচায় ইমরান খানকে উপহার হিসেবে সেই গহনা সেটটি দেন। কিন্তু গহনার সেটটি সরকারি তোষাখানায় জমা দেওয়ার কথা থাকলেও, ইমরান দম্পতি সেটটি অল্প দামে কিনে নিয়েছেন, যা পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন-এর বরাতে জানা গেছে।

মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করে, এই প্রায় ৮ কোটি পাকিস্তানি রুপি মূল্যের গহনা সেটটি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রাখেন ইমরান খান। আদালতে চলমান বিচারকালে, বিশেষ বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ এই রায় ঘোষণা করেন। ইমরান বর্তমানে নিজেকে কারাগারে রাখছেন আদিয়ালা কারাগারে।

ইসলামাবাদ সংবাদমাধ্যম ডন-এর রিপোর্টে জানানো হয়, এই মামলার জন্য ইমরানকে মোট ১৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের ফৌজদারি আইনের ৩৪ ধারায় (সাধারণ অভিপ্রায়) and ৪০৯ ধারায় (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ) তাকে ১০ বছর, পাশাপাশি দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৫(২) ধারায় আরও সাত বছর। তার স্ত্রী বুশরা বিবিকেও একই ধারায় মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে এক কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। অনাদায়ে এই অর্থ না দিলে তাদের কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়বে।

আদালত জানিয়েছে, ইমরানের বয়স (৭২ বছর) এবং বুশরা বিবি হিসাবে নারীর কারণে, তাদের নরম দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় (নম্রতা দেখিয়ে) কম শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে কারাদণ্ড কার্যকর হলে তাদের আটক রাখা হবে।

২০১২ সালে এই মামলায় অভিযুক্ত হন ইমরান খান। ২০২৩ সালে এই মামলার যাবতীয় অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তিনি, জোর দিয়ে বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা, যা তার রাজনীতি থেকে সরানোর জন্য সাজানো। এর আগে, ইমরান ১৯ কোটি পাউন্ডের এক দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছর কারাদণ্ডেও দণ্ডপ্রাপ্ত। অন্যান্য মামলার পাশাপাশি তিনি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ও দুর্নীতির মামলায় বিভিন্ন সাজা ভোগ করছেন।

অন্যদিকে, এই রায় ঘোষণার পর পিটিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কারাগারে বিচারাধীন তোষাখানা-২ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে, যার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয় এবং এটি মূলত একটি সামরিক বিচার। রায় দেওয়ার সময় ইমরানের পরিবারের কাউকেও কারাগারে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।’

পোস্টটি শেয়ার করুন