দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও বৈদেশিক ব্যবসায় নতুন প্রেরণা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে মোট ৪২৯ ট্রাকে ১০ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। মূলত দেশি তৈরী বিস্কুট, আসবাব, প্লাস্টিকের পাইপসহ বিভিন্ন পণ্য এই রপ্তানির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি, এই সময়ের মধ্যে ভারত থেকে পণ্য আমদানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানির মানে বেশ উন্নতি হয়েছে। বহুমুখী পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ফলে শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। হিলি কাস্টমসের সূত্র বলছে, এই অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৪২৯ ট্রাকের মাধ্যমে ১০ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন পণ্য ও ৯ হাজার ৩৮৪ ট্রাকের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে, যার মাধ্যমে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ২২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছরে, অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সালে, একই সময় ভারত থেকে ৮ হাজার ৪৮৭ ট্রাকে ২ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন পণ্য আনা হয়েছিল, যার ফলে সরকার অন্তত ২৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছিল। তবে, চলতি অর্থবছরে হিলি বন্দরে পণ্য রপ্তানি খুবই ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এই বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি প্রায় শূন্যের কাছাকাছি থাকলেও, এখন অনেক দেশি পণ্য রপ্তানি হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত থেকে পণ্য আমদানিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বন্দরের কর্মচারীদের জন্য নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। আমদানিকারক নূর ইসলাম জানান, গত বছর প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫টি ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করত। তবে চলতি বছরের ১২ আগস্ট থেকে এই সংখ্যাটা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ১৫০ থেকে ১৬০ ট্রাক পর্যন্ত পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। আমদানি ও রপ্তানি ঠিকঠাক থাকলে বন্দরের সব পেশাজীবী উপকৃত হন।’ হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সংগঠনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘এই বন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আরও বাড়ছে। আগে এই বন্দর দিয়ে খুব কম পণ্য রপ্তানি হতো, কিন্তু এখন তা উল্লেখযোগ্য। আমরা রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়ানোর জন্য কাজ করছি, আশা করছি ভবিষ্যতে আরও বেশি পণ্য রপ্তানি হবে।’ হিলি পানামা পোর্ট লিঙ্ক লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক অতিশ কুমার শ্যানাল জানিয়েছেন, ‘এই বন্দরের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় বেড়েছে। ভারতে রপ্তানি হওয়া ট্রাক প্রতি ওজন ফি ১৪৬ টাকা এবং এন্ট্রি ফি ১৬৮ টাকা নেওয়া হয়।’ হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ বলেন, ‘হিলি বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এই অর্থবছরে চালু পর্যায়েই পণ্য রপ্তানি এবং আমদানির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, ভারত থেকে আসা কাঁচা পণ্য যেমন আদা, রসুন, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ ও মটরশুঁটি দ্রুত কার্যক্রমে সম্পন্ন করা হচ্ছে, কারণ এইসব পণ্য পচনশীল। সকল কার্যক্রম দ্রুত পরিচালনা করে পণ্য পরিবহন ও বাণিজ্য সহজ করে তুলতেও আমরা উদ্যোগী।





