শুক্রবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকার অনুরোধের বিষয় ভারতের মনোযোগ

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য ঢাকার পাঠানো চিঠির জবাব এখনও আসেনি বলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ভারতের তরফ থেকে এত দ্রুত উত্তর পাওয়ার আশা না করাই স্বাভাবিক। গতকাল বুধবার তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

অন্যদিকে, দিল্লির ভারতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, শেখ হাসিনার ফেরত অনুরোধটি বিচারিক এবং অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

তৌহিদ হোসেন জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই চিঠিটি কূটনৈতিক পর্যায়ে ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও কোনো উত্তর আসেনি এবং ততটাই দ্রুত এর প্রত্যাশা করেন না তারা। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও আগের চিঠিরও উত্তর পাইনি। তাই এটা সঙ্গে সঙ্গে বা এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর আসবে বলে আমি মনে করি না। তবে আশা করি, কোনো না কোনো উত্তর পাব।’

চিঠিতে কী বলা হয়েছে? জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেহেতু তাঁকে বিচারে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাই তাকে ফেরত দেওয়া হোক।

উল্লেখ্য, ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কাদেরকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এই দণ্ডের পর তাদের হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ ভারতকে চিঠি পাঠিয়েছে। এর আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ২০ ও ২৭ তারিখে এই অনুরোধ জানিয়ে আবারো চিঠি দেওয়া হয়, যাতে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করা হয়।

অন্যদিকে, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতীয় পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন কেন্দ্রো পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে, তৌহিদ হোসেন স্পষ্ট করেন, এটি পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব এবং সেখানে দেশের সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি, যদি ভারতীয় পর্যবেক্ষকরা আসে, তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কোনো সহায়তা দেওয়া হবে না।

এছাড়া, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের বিষয়েও কোনো পশ্চিমা চাপ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, আগামী নির্বাচন প্রশান্তির সঙ্গে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করে সম্পন্ন করতে আ সরকারের কোনো চাপ বা বাধ্যবাধকতা মনে হয় না।

অন্যদিকে, এয়ারবাসের বিমান কেনা নিয়ে কোনো চাপ না থাকলেও, ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উপর এটা কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এটি একটি বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত এবং এটি বাংলাদেশের সম্পর্কের উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। তিনি যোগ করেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামতের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না এবং রাষ্ট্রদূত বা অন্য যেভাবে দাবী করলে, তার উপর ভিত্তি করেও কেনা হয় না।

সংক্ষেপে, দিল্লি বাংলাদেশের অনুরোধ পরীক্ষা করছে এবং শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে, এই লক্ষ্য অর্জনে তারা বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন