শুক্রবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা প্রচেষ্টা শুরু

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের নির্দিষ্ট শাখাগুলিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং বিশেষভাবে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি আরব বিশ্বের অন্যতম পুরোনো এবং প্রভাবশালী ইসলামি আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হোয়াইট হাউসের ফ্যাক্ট শিটের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গত সোমবার একটি নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্টকে মিসর, লেবানন ও জর্ডানে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করার জন্য একটি প্রতিবেদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদন ৪৫ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলো ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলা চালাতে সহায়তা করছে বা উৎসাহিত করছে, এমনকি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকেও অস্ত্র ও সমর্থন দিয়ে সহায়তা করছে। হোয়াইট হাউসের এই দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তর্জাতিক জালয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন, কারণ এটি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থ ও মিত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডানপন্থি রাজনৈতিক উপদেষ্টারা মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার জন্য দাবী করে আসছেন। ট্রাম্পের প্রথম ক্যারিয়ারে এরকম এক প্রচেষ্টা তিনি চালিয়েছিলেন, এবং তার দ্বিতীয় মেয়াদে এই কাজটি আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য তার প্রশাসন কাজ করছে। টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট সম্প্রতি অঙ্গরাজ্য থেকেই মুসলিম ব্রাদারহুডের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ১৯২০-এর দশকে মিসরে ধর্মনিরপেক্ষ ও জাতীয়তাবাদী ধ্যানধারণার বিপরীতে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি দ্রুত মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। তবে বেশিরভাগ সময় এটি গোপনে কাজ করে এবং জর্ডানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। যদিও ২০২০ সালে দেশটির শীর্ষ আদালত মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করে, তারপরেও অতীতে অনেক সময় তারা কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। মিসরে ২০১৩ সালে সংগঠনটির নেতা ও নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি দেশ পরিচালনা করছেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিবিড়। এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত ডেনি ড্যানন। তিনি এক এক্সে পোস্ট দিয়ে বলেন, এটি শুধু ইসরায়েলের জন্য নয়, বরং পুরো আরব বিশ্বের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

পোস্টটি শেয়ার করুন